শান্তি, শৃংখলা, উন্নয়ন ও নিরাপত্তায় সর্বত্র আমরা
১। প্রশিক্ষণের নিয়মাবলী :
ক। গ্রামভিত্তিক মৌলিক প্রশিক্ষণ (ভিডিপি পুরুষ ও মহিলা) :
এই প্রশিক্ষণের মাধ্যমে গ্রাম প্রতিরক্ষা দলের সদস্য-সদস্যাগণ ভিডিপি সংগঠন সম্পর্কে ধারনা লাভ করেন এবং ভিডিপি প্লাটুনের সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করতে সক্ষম হন।
প্রশিক্ষণের নিয়মাবলীঃ
· সংশিষ্ট গ্রামের ৩২ জন পুরুষ এবং ৩২ জন মহিলা সমন্বয়ে গঠিত দু’টি প্লাটুনকে বিনামূল্যে প্রশিক্ষণ দেয়া হয়।
· গ্রামের সুবিধাজনক স্থানে ১০ (দশ) দিনের এই প্রশিক্ষণ কার্যক্রম পরিচালিত হয়।
· একটি গ্রামে একবার এই প্রশিক্ষণ দেয়া হয়।
· প্রশিক্ষণার্থীকে সর্বনিন্ম অষ্টম শ্রেণী পাশ হতে হয়।
· প্রশিক্ষণার্থীর বয়স সর্বনিন্ম ১৮ এবং সর্বোচ্চ ৩০ বছর।
· প্রশিক্ষণ ভাতা হিসাবে দৈনিক১৫০ টাকা হারে ১০ দিন প্রশিক্ষণে ১৫০০ টাকা প্রশিক্ষণ ভাতা প্রদান করা হয়।
· প্রশিক্ষণ শেষে প্রাপ্ত ১৫০০ টাকা থেকে ১০০ টাকা মূল্যের ৫টি আনসার-ভিডিপি উন্নয়ন ব্যাংকের ৫টি শেয়ার ক্রয় করতে হয়।
· প্রশিক্ষনার্থীকে প্রশিক্ষণ শেষে সনদপত্র প্রদান করা হয়।
· এক গ্রামের সদস্যকে অন্য গ্রামে প্রশিক্ষণ দেয়া হয় না।
· জেলা কমান্ড্যান্ট আর্থিক বছর শুরুর আগেই উপজেলা কর্মকর্তার সুপারিশ মোতাবেক গ্রাম নির্বাচন করেন।
· এই প্রশিক্ষণের মাধ্যমে গ্রামের ভিডিপি পুরুষ ও মহিলা পাটুন সমূহ পুনগঠিত হয়।
· প্রশিক্ষণ গ্রহণকারী সদস্য সদস্যাগণ ৩য় ও ৪র্থ শ্রেণীর সরকারী চাকুরীতে নির্ধারিত ১০% কোটায় আবেদন করার সুযোগ পান।
খ। সাধারণ আনসার মৌলিক প্রশিক্ষণ (পুরুষ ও মহিলা) :
এই প্রশিক্ষণ গ্রহণ করলে সদস্য ও সদস্যাগণ সাধারণ আনসার হিসেবে দায়িত্ব পালনে সক্ষম হন এবং অঙ্গীভূত হওয়ার যোগ্যতা অর্জন করেন।
এই প্রশিক্ষণের নিয়মাবলী নিন্মরূপঃ
· জেলা সদরে প্রাথমিক পর্ব এবং ধারাবাহিকভাবে গাজীপুরের সফিপুর আনসার-ভিডিপি একাডেমীতে চূড়ান্ত পর্বে এ প্রশিক্ষণ পরিচালিত হয়।
· উপজেলা আনসার ও ভিডিপি কর্মকর্তা কোটা অনুযায়ী সদস্য ও সদস্যা বাছাই করে জেলা কমান্ড্যান্ট-এর কার্যালয়ে তালিকা প্রেরণ করেন।
· আনসার আইন ১৯৯৫ এবং আনসার বাহিনী প্রবিধানমালা ১৯৯৬এর আলোকে সংশিষ্ট ব্যক্তিকে নিন্মরূপ যোগ্যতা সম্পন্ন হতে হয়ঃ
ক) বয়স ১৮ হতে ৩০ বছর।
খ) শিক্ষাগত যোগ্যতা ন্যূনতম অষ্টম শ্রেণী পাশ। তবে এসএসসি বা তদূর্ধ ডিগ্রীধারীগণকে প্রশিক্ষণ গ্রহণে অগ্রাধিকার দেয়া হয়।
গ) উচ্চতা।
ঘ) সর্বনিম্ন ১৬০ সেন্টিমিটার অর্থাৎ ৫র্- ৪র্ (পুরুষের ক্ষেত্রে)
ঙ) সর্বনিমড়ব ১৫০ সেন্টিমিটার অর্থাৎ ৫র্- ০র্ (মহিলার ক্ষেত্রে)
চ) বুকের মাপ ৭৫ সেন্টিমিটার হইতে ৮০ সেন্টিমিটার অর্থাৎ ৩০র্ - ৩২র্ (পুরুষের ক্ষেত্রে)।
ছ) দৃষ্টি শক্তিঃ ৬/৬।
· সাধারণ আনসার মৌলিক প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণের সময় শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদ এবং চারিত্রিক ও নাগরিকত্ব সার্টিফিকেট দাখিল করতে হয়
· প্রশিক্ষণকালীন প্রশিক্ষণার্থীদের বিনামূল্যে থাকা, খাওয়া, পোষাক-পরিচ্ছদ প্রদান করা হয়।
· এ প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণের জন্য কোন সদস্যের নিকট হতে কোন অর্থ গ্রহণ করা হয় না।
· এ প্রশিক্ষণ সাফল্যজনকভাবে সমাপ্তির পর দেশের বিভিন্ন সরকারী-বেসরকারী কেপিআই/গুরুত্বপূর্ণ সংস্থায় অংগীভূত হয়ে নিরাপত্তা
বিধানের দায়িত্বপালন করে।
· প্রশিক্ষণ গ্রহণকারী সদস্য/সদস্যাগণ দূর্গাপূজা, জাতীয় ও স্থানীয় সরকার নির্বাচনে দায়িত্ব পালনের জন্য স্বল্পকালীন সময়ের জন্য অংগীভূত
হয়ে থাকেন।
গ) পেশাভিত্তিক প্রশিক্ষণ :
মৌলিক প্রশিক্ষণ ছাড়াও পেশাভিত্তিক প্রশিক্ষণের মাধ্যমে একজন আনসার ভিডিপি সদস্য/সদস্যা স্বনির্ভর হবার সুযোগ পায়। আনসার-ভিডিপি সংগঠন প্রতিবছর বিভিন্ন ধরনের পেশাভিত্তিক প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকে। যেমনঃ
· মৎস্য চাষ প্রশিক্ষণ (সাধারণ আনসার এবং ভিডিপি পুরুষ)।
· কম্পিউটার বেসিক কোর্স (ব্যাটালিয়ন আনসার, সাধারণ আনসার ও ভিডিপি সদস্য-সদস্যা)।
· ইলেকট্রিশিয়ান কোর্স (ভিডিপি সদস্য/ব্যাটালিয়ন আনসার/সাধারণ আনসার)।
· নকশি কাঁথা কোর্স (ভিডিপি সদস্য)
· বাক বেঙ্গল জাতের ছাগল পালন প্রশিক্ষণ (ভিডিপি পুরুষ)।
· উন্নত প্রযুক্তিতে আলু চাষ, সংরক্ষণ ও ব্যবহার শীর্ষক প্রশিক্ষণ (ভিডিপি পুরুষ)।
· ড্রাইভিং প্রশিক্ষণ (ভিডিপি পুরুষ)।
· গবাদী পশু পালন কোর্স (ভিডিপি পুরুষ)।
· হাঁস-মুরগী চিকিৎসা ও পালন কোর্স (ভিডিপি পুরুষ)।
· ফ্রিজ ও এয়ার কন্ডিশনার মেরামত কোর্স (ভিডিপি পুরুষ/সাধারণ আনসার)।
· অমৌসুমী সবজি চাষ প্রশিক্ষণ (আনসার-ভিডিপি পুরুষ/মহিলা)।
· উন্নত প্রযুক্তিতে নার্সারী স্থাপন প্রশিক্ষণ (আনসার-ভিডিপি পুরুষ/মহিলা)।
· দেশীয় পদ্ধতিতে হাঁস-মুরগীর বাচ্চা স্ফুটন ও পালন (আনসার-ভিডিপি মহিলা)।
· নারকেলের মালাই থেকে বোতাম তৈরী প্রশিক্ষণ (ভিডিপি সদস্য)।
· আধুনিক ফলচাষ প্রশিক্ষণ (আনসার ও ভিডিপি পুরুষ)।
· উন্নত মানের আমচারা উৎপাদন প্রশিক্ষণ (ভিডিপি সদস্য)।
· স্ট্রবেরী চাষ ও উৎপাদন প্রশিক্ষণ (ভিডিপি পুরুষ)।
· উন্নত জাতের মাশরুম চাষ প্রশিক্ষণ (ভিডিপি সদস্য)।
· সেলাই প্রশিক্ষণ (আনসার সদস্যা/ভিডিপি সদস্যা)।
সাধারন আনসার অঙ্গীভূতির নিয়মাবলী :
ঘ) আনসার সদস্যের জন্য :
যে কোন সরকারী বা বেসরকারী প্রতিষ্ঠান/সংস্থায় চাহিদা বিবেচনা করে তাদের নিরাপত্তা রক্ষার জন্য নিম্নলিখিত পদ্ধতি অনুসরণ করে আনসার অংগীভূত করে দায়িত্বে নিয়োগ করা হয়।
· জেলা কমান্ড্যান্ট-এর সার্বিক তত্ত্বাবধানে একটি কমিটি কর্তৃক পূর্ব নির্ধারিত তারিখে আনসার বাছাই করে ভবিষ্যতে অঙ্গীভূত করার জন্য
প্যানেল প্রস্তুত করা হয়।
· বর্তমানে তিন বছরের জন্য সংস্থায় আনসার অঙ্গীভূত করা হয় অর্থাৎ ১জন আনসারের অঙ্গীভূতির মেয়াদ একনাগাড়ে তিন বছর।
· অঙ্গীভূতিকাল সমাপ্তির পর পরই কোন আনসার সদস্য অঙ্গীভূতির জন্য প্যানেলে অংশ গ্রহণ হতে পারে।
· এক জেলার আনসার সদস্য অন্য জেলায় অঙ্গীভূত হতে পারবেন না। তবে ঢাকা, নারায়নগঞ্জ, গাজীপুর, চট্র্গ্রাম ও খুলনা জেলার বেলায়
এই নিয়ম প্রযোজ্য নয়।
· জেলা কমান্ড্যান্ট প্যানেলের ক্রমিক অনুযায়ী অঙ্গীভূত আদেশ জারী করে থাকে। কোন প্যানেলভুক্ত আনসার অঙ্গীভূতির জন্য রিপোর্ট না
করলে পরবর্তী ক্রমিক নম্বর ধারীকে অঙ্গীভূত করা হয়।
· আনসার সদস্যদের অঙ্গীভূতির জন্য ফায়ারিং অভিজ্ঞতাসহ মৌলিক প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত হতে হয়।
· অঙ্গীভূতি হওয়ার জন্য প্যানেলভুক্তির নিমিত্তে নিম্নলিখিত যোগ্যতা প্রয়োজন :
(ক) বয়সঃ ১৮ থেকে ৪০ বছর।
(খ) শিক্ষাগত যোগ্যতাঃ ৮ম শ্রেণী পাস, তদূর্ধদের অগ্রাধিকার দেয়া হয়।
(গ) উচ্চতাঃ ৫র্ - ৪র্ (পুরুষ), ৫র্ - ৪র্ (মহিলা) (অধিক উচ্চতা সম্পন্ন প্রার্থীদের অগ্রাধিকার দেয়া হয়)।
(ঘ) বৈবাহিক অবস্থা বিবাহিত/অবিবাহিত উভয়ই।
(ঙ) ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান/ওয়ার্ড কমিশনার কর্তৃক প্রদত্ত চারিত্রিক ও নাগরিকত্ব সনদপত্র, শিক্ষাগত যোগ্যতা সনদের সত্যায়িত কপি, সাধারণ আনসার মৌলিক প্রশিক্ষণের সনদ, পুলিশ ভেরিফিকেশন রিপোর্ট, জেলা কমান্ড্যান্ট কর্তৃক প্রদত্ত অনাপত্তি পত্র (অন্য জেলার প্রার্থির ক্ষেত্রে প্রযোজ্য), ০৬ কপি পাসপোর্ট এবং ০৩ কপি স্ট্যাম্প সাইজের ছবি ইত্যাদি প্রয়োজন হয়। যোগ্যতার ভিতিত্তে সংস্থায় আনসার অঙ্গীভূত করা হয়। সুতরাং এ বিষয়ে আর্থিক লেনদেন দন্ডনীয় অপরাধ হিসেবে বিবেচিত হবে।
· সাধারণত বছরের শুরুতে এবং মাঝামাঝি সময়ে অঙ্গীভূতির জন্য প্যানেল প্রস্ত্তত করা হয়। বিশেষ বিশেষ ক্ষেত্রে ঢাকা, চট্টগ্রাম,
নারায়নগঞ্জ, গাজীপুর জেলার বিশেষ প্যানেল প্রস্ত্তত করা হয়।
· পিসি/এপিসি দৈনিক ২৫১.৯৫ টাকা হিসাবে ৩০ দিনে ৭৫৫৮.৫০ টাকা, আনসার দৈনিক ২৩৪ টাকা হিসাবে ৩০ দিনে ৭০২০ টাকা
বেতন-ভাতা হিসাবে প্রাপ্ত হন। এছাড়া পিসি/এপিসি ৫৫৯৫.৩০ টাকা হারে ২টি এবং আনসার ৫১০৩.৬০ টাকা হারে ২টি উৎসব বোনাস
প্রাপ্ত হন।
· প্রত্যেক অঙ্গীভূত আনসার সরকারী নিধারিত হারে মাসে ২৮ কেজি গম, ২৮ কেজি চাল এবং ২ লিটার ভোজ্য তেল ভতুর্কি মূল্যে প্রাপ্ত হন
· অঙ্গীভূত হয়ে দায়িত্ব পালনকালে দুর্ঘটনাজনিত কারণে আনসার সদস্যগণ বিভাগীয় কল্যাণ তহবিল হতে চিকিৎসা ব্যয় বাবদ আর্থিক
সহায়তা লাভ করেন।
· কন্যা বিবাহ, মেধাবী সন্তানদের উচ্চতর শিক্ষার জন্য আনসার সদস্যগণ আর্থিক সহায়তা প্রাপ্ত হন।
· কৃতিত্বপূর্ণ কাজের জন্য বিশেষ সম্মাননা পদক ও আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হয়।
পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে: মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, এটুআই, বিসিসি, ডিওআইসিটি ও বেসিস